ফলের রোগ শনাক্তকরণ ও প্রতিকার

এসএসসি(ভোকেশনাল) - ফ্রুট এন্ড ভেজিটেবল কাল্টিভেশন-২ - দ্বিতীয় পত্র (দশম শ্রেণি) | | NCTB BOOK
2

আমড়া, নারিকেল, আঙ্গর ও লিচুর গুরুত্বপূর্ণ রোগ সনাক্ত ও রোগের নমুনা প্রদর্শন:

প্রাসঙ্গিক তথ্য: 

রোগ জীবাণু উদ্ভিদ দেহে প্রবেশ করে সেখানে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করে । পোষাকের দেহের কোষ নষ্ট করে । খাদ্যরস গ্রহণ করে । উদ্ভিদের দৈনন্দিন কাজে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়। এ অস্বাভাবিকতার বাহ্যিক প্রকাশকে আমরা রোগের লক্ষণ বলে (Symptom)। এটা বিভিন্ন ভাবে প্রকাশ পায়। যেমন পাতা পঁচা, পাতার দাগ, পাতা পাড়ো, কাণ্ডের দাগ। কাণ্ড পচা, ঢলে পড়া ইত্যাদি । আবার কোন কোন সময় রোগের এ বাহ্যিক লক্ষণের মধ্যে রোগজীবাণুর উপস্থিত থাকে । যেমন একটি পাতার দাগের মধ্যে রোগজীবাণুর পারে বা মাইসেলিয়াম খালি চোখে দেখা যায় । লক্ষণের মধ্যে রোগজীবাণুর আংশিক উপস্থিতিকে চিহ্ন বা সাইন বলে ।

প্রয়োজনীয় উপকরণ 

১। রোগাক্রান্ত গাছের পাতা, ডাল, ফুল, ফল বা মূল । 

২। কাগজ, পেনসিল, রাবার। 

৩। আমড়া, নারিকেল, আঙ্গুর ও লিচুর প্রধান প্রধান রোগের নমুনা ।

কাজের ধাপ

১। সংগৃহীত নমুনা (রোগাক্রান্ত, পাতা, ফুল, ফল, বাকল ও মূল) টেবিলে নিয়ে আসতে হবে । 

২। নমুনাটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে । 

৩ । নমুনার কোন অংশে রোগের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে তা খাতায় লিখে রাখতে হবে। 

৪ । আক্রান্ত অংশের রং, আকার, আয়তন, ইত্যাদি লিখে রাখতে হবে । 

৫ । আক্রান্ত অংশে দাগ পড়লে দাগের সংখ্যা নিরুপণ করতে হবে । 

৬। লিখিত লক্ষণের সাথে প্রকাশিত বইয়ের লক্ষণের সামঞ্জসাতা মিলিয়ে দেখতে হবে। 

৭ । রঙিন স্লাইড প্রদর্শিত হলে, স্লাইডগুলো ভাল করে দেখ, আক্রান্ত অংশের রঙের পরিবর্তন লক্ষ করতে হবে । 

৮ । পুক, ছবি হারবেরিয়াম শিট ও কাচের আধারে রক্ষিত নমুনার বৈশিষ্ট্য ও জীবাণুর বৈশিষ্ট্য মিলিয়ে রোগকে নিশ্চিতভাবে সনাক্ত করতে হবে ।

সতর্কতা 

১ । রোগাক্রান্ত পাতা ডাল, ফল বা মূল সংগ্রহের সময় রোগ না পোকার আক্রমণ বা অন্য কোন কারণ তা দেখে নিতে হবে । 

২। রোগাক্রান্ত নমুনাটি সংগ্রহের পরপরই পর্যবেক্ষণ করতে হবে । শুকিয়ে গেলে অনেক লক্ষণ চেনা নাও যেতে পারে ।

বোর্দো মিক্সচার প্রস্তুত পদ্ধতি অনুশীলন

প্রাসঙ্গিক তথ্য: এটি একটি তামাঘটিত অজৈব, খুবই জনপ্রিয় ও সবচেয়ে পুরাতন ছত্রাকনাশক । এ ঔষুধ বিভিন্ন মাত্রায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে । তবে সাধারণত শতকরা একভাগ ক্ষমতা সম্পন্ন বোর্দোমিক্সচার গাছে ছিটানো হয় ।

প্রয়োজনীয় উপকরণ 

১। কুঁতে ২। চুন ৩ । পানি ৪। ২টি ছোট ও একটি বড় মাটির পাত্র ৫। ২টি বাঁশ বা কাঠের কাঠি ৬ । প্রেয়ার ৭ । একটি ইস্পাতের চাকু ।

কাজের ধাপ

১। কুঁতে ও চুন পৃথকড়াবে মিহি করে গুড়া করতে হবে । 

২। ছোট মাটির পাত্র দু'টিতে ৫ লিটার করে পানি নিতে হবে । 

৩। একটি পাত্রে ১০০ গ্রাম মিহি চূর্ণ কুঁতে ও অন্য পাত্রে ১০০ গ্রাম মিহি চূর্ণ চুন ঢেলে দিতে হবে । 

৪ । বাঁশের কাঠি দিয়ে পৃথক পৃথকভাবে ঘুটে নিতে হবে । ৮-১০ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে । 

৫ । অতঃপর দু'পাত্রের দ্রবণ বড় মাটির পাত্রে একসাথে ঢেলে নিতে হবে । পাত্রটি একটু ঝাঁকিয়ে নিতে হবে । এটাই বোর্দো মিক্সচার অর্থাৎ তৈরি মিশ্রণটি বোর্দো মিক্সচার । 

৬। মিক্সচারের রঙ পরীক্ষা করতে হবে । 

৭। মিশ্রণের রঙ গাঢ় নীল হলে মিশ্রণ সঠিক হয়েছে বুঝতে হবে। সবুজ রঙ বা সাদাটে হলে বুঝতে হবে যথাক্রমে পুঁতে বা চুন বেশি হয়েছে । ৮। বোর্দো মিক্সচার এখন স্প্রে করতে পারবে।

সতর্কতা 

১। কুঁতে ও চুন মিহি করে চূর্ণ হয়েছে কি না ভাল করে দেখে নিতে হবে। চূর্ণ করার পর তঁত ও চুন সঠিক ভাবে মেপে নিতে হবে। 

২। বোর্দো মিক্সচার তৈরির ২-৩ ঘন্টা মধ্যে স্প্রে করতে হবে । 

৩ । প্রস্তুতকৃত বোর্দো মিক্সচার ইস্পাতের চাকুর অগ্রভাবে ডুবিয়ে দেখো লালচে দাগ পড়ে কি না। না পড়লে বুঝবে মিশ্রণ ঠিক হয়েছে।

Content added || updated By
Promotion